চাঁদাবাজি-কালোবাজারি রুখতে বাজার মনিটরিং
দেশের অদ্ভুত পরিস্থিতিতে যে যেভাবে পেরেছে সিন্ডিকেট, চাঁদাবাজি ও কালোবাজারি করে নিত্যপণের দাম বাড়িয়েছে। সেসব উদ্দেশ্য বন্ধ ও প্রতিরোধে বাজার মনিটরিংয়ে নেমেছে লিগ্যাল এমপাওয়ারমেন্ট বাংলাদেশ (এলইবি)। মূলত অবৈধ কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ করা এবং বাজার ব্যবস্থাপনাকে আইনানুগভাবে পরিচালিত করতে সকল ব্যবসায়ীকে উৎসাহিত করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য।
শনিবার (১০ আগস্ট) চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাট কাঁচা বাজারে এলইবি সংগঠনটির উদ্যোগে বিশেষ বাজার মনিটরিং ও আইনি সচেতনতা মূলক প্রচার অভিযান পরিচালিত হয়।
এলইবি’র মনিটরিং টিম বাজারের বিভিন্ন পণ্য; যেমন— মাছ, মুরগি, শুঁটকি, সবজি, গরুর মাংসসহ বিভিন্ন দোকানে নিবিড় পর্যবেক্ষণ চালায়। মনিটরিংয়ের সময় জানা যায়, সম্প্রতি ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে গত ৫ আগস্ট থেকে চাঁদাবাজদের অবৈধ চাঁদা আদায় কার্যক্রম বন্ধ হওয়ায় বাজারের ব্যবসায়ী এবং ক্রেতাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। আগে প্রতিটি দোকান থেকে প্রতিদিন ২শ’ থেকে ৭শ’ টাকা পর্যন্ত ‘চাঁদা’ আদায় করতো। যা রসিদ ছাড়াই নেওয়া হতো এবং এতে ব্যবসায়ীদের ব্যবসায় ক্ষতি হতো।
একজন ব্যবসায়ী (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) এলইবি’র টিমকে জানান, চাঁদার টাকা পরিশোধের কারণে তারা ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণামূলক আচরণ করতে বাধ্য হতেন। যেমন, ওজনে কম দেওয়া, অতিরিক্ত মূল্য আদায়, পঁচা পণ্য বিক্রি করতো।
এলইবি’র মনিটরিং টিম বাজারের ব্যবসায়ীদের চাঁদাবাজির বিষয়ে সচেতন করেছেন। পাশাপাশি তাদের অধিকার ও করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানিয়েছে।
দলটি ব্যবসায়ীদের জানিয়েছে, রসিদ ছাড়া কোনো ধরনের অর্থ লেনদেন করলে তা আইনি পর্যবেক্ষণের আওতায় আসবে না। এর ফলে ব্যবসায়ীরা সমস্যায় পড়তে পারেন। তারা আইনি সাহায্য চাইলে তা প্রদান করাও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। এছাড়া, কর বা বাজার ইজারা পরিশোধও বৈধ রসিদের মাধ্যমেই করতে হবে।
এলইবি’র আইনি সচেতনতা প্রচারণায় ব্যবসায়ীদের আরো সতর্ক করা হয় যে, তারা যেন কোনো অবস্থাতেই ক্রেতাদের ঠকানোর চেষ্টা না করেন। ভোক্তাদের অধিকার ক্ষুণ্ন করলে যে শাস্তির বিধান রয়েছে; সে সম্পর্কেও তাদের সচেতন করা হয়।
এ ধরনের সচেতনতা মূলক প্রচার অভিযানের ফলে বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে আস্থা ফিরে আসবে এবং চাঁদাবাজি বন্ধ হবে। ফলে উভয় পক্ষই স্বস্তিতে থাকতে পারবেন ও বাজারে সুশৃংখল পরিবেশ সৃষ্টি হবে বলে আশা ব্যক্ত করেছেন বাজারের নানা ব্যবসায়ী এবং ক্রেতারা।
এলইবি’র বাজার মনিটরিং এবং আইনি সচেতনতা মূলক কার্যক্রম চলমান থাকবে বলে জানিয়েছে মনিটরিং টিম। যাতে বাজারের চাঁদাবাজি ও কালোবাজারি কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা যায় এবং ব্যবসায়ীরা সঠিকভাবে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন। একইসঙ্গে ভোক্তারাও যাতে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়।