আমরা ভয় পাই কেন?
হরর মুভি দেখার সময় নিশ্চয় ভয় পাও মাঝে-মধ্যে। হৃৎপিণ্ড ধুকপুক করতে থাকে।
বুঝি বেরিয়েই যাবে এমন অবস্থা। শরীর শিরশির করে, হাত-পা শক্ত হয়ে যায়, নড়তে পারো না তুমি। মনে হয়, এক্ষুণি পেছন থেকে কেউ জাপটে ধরবে!
শুধু হরর মুভি নয়, আমরা বহু করণে এমন ভয় পাই। শব্দ, চিৎকার ও বিভিন্ন পরিস্থিতি ভয়ের উদ্রেককারী। এমন প্রায়ই হয়, আমরা জানি যা দেখছি বা শুনছি তা বিপজ্জনক নয়। তবুও ভয় পাই। এর কারণ কী?
যখন আমরা ভয়ঙ্কর কোনো দৃশ্য দেখি বা বর্ণনা শুনি, তখন আমাদের মস্তিষ্ক ক্ষতির সম্ভাবনাগুলোকে একে একে স্পষ্ট করে তোলে ও সংকেত দেয়। যেমন- হন্টেট হাউজে কেউ হেঁটে যাচ্ছে। তার আশেপাশে পড়ে থাকা কঙ্কালগুলো নড়ছে বা অশুভ আত্মার উপস্থিতি রয়েছে। ব্যাপারগুলো দেখার পর মস্তিষ্কের অ্যামিগডালাতে বিপদ সংকেত পৌঁছে। মস্তিষ্কের নিচের দিককার এ জিনিসটিই আমাদের ভয় ও প্যানিকের জন্য দায়ী।
সংকেত পেয়ে অ্যামিগডালা গ্লুটামেট নামক এক প্রকার ব্রেন কেমিক্যাল মস্তিষ্কের দুটো অঞ্চলে ছড়িয়ে দেয়। প্রথম অঞ্চলটি আমাদের মধ্যে হিম অনুভূতি সৃষ্টি করে বা ঝাঁকুনি দেয়। এ সংকেত মস্তিষ্কের নিম্নতর ও গভীর অঞ্চলে পাঠানো হয়। যেখানে আমাদের নিজেদের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা খুব সামান্যই রয়েছে।
এরপর দ্বিতীয় অঞ্চল হাইপোথ্যালামাসে ব্রেন কেমিক্যাল পৌঁছায়। সংকেতে উদ্বেলিত হয় আমাদের অটোনমিক নার্ভাস সিস্টেমও। এ সিস্টেমটি আমাদের মস্তিষ্কের ফাইট ও ফ্লাইট প্রবৃত্তির জন্য দায়ী। ফাইট ও ফ্লাইট একটি শারীরবৃত্তীয় প্রতিক্রিয়া। এটি অনুভূত যেকোনো ক্ষতিকর ঘটনা, আক্রমণ বা বেঁচে থাকার হুমকির প্রতিক্রিয়া। যার ফলে, আমাদের হৎপিণ্ডের গতি ও রক্তচাপ বাড়ে এবং দেহজুড়ে বৃক্করস সঞ্চালিত হয়। এসময় আমরা যে অনুভূতি উপলব্ধি করি সেটাই ভয়।