গাজায় নেতানিয়াহুর ‘নিরঙ্কুশ বিজয়’ নিয়ে সন্দেহ যুক্তরাষ্ট্রের
ফিলিস্তিনের গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ‘নিরঙ্কুশ বিজয়’ অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
তবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন মনে করে না, হামাসকে হারিয়ে তার এ ‘নিরঙ্কুশ বিজয়’ অর্জিত হতে যাচ্ছে বা এটা সম্ভব। স্থানীয় সময় সোমবার যুক্তরাষ্ট্রে উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী কার্ট ক্যাম্পবেল এ কথা বলেছেন।
গাজায় হামলা শুরুর পর নেতানিয়াহু প্রায়শই বক্তৃতা-বিবৃতিতে ‘নিরঙ্কুশ বিজয়’ শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করে আসছেন। তিনি বারবার বলে আসছেন, এই লক্ষ্য অর্জিত হওয়ার পথে।
যখন গাজায় যুদ্ধ পরবর্তী প্রশাসনের বিষয়ে সুস্পষ্ট পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করতে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন, তখন এ পর্যন্ত একজন শীর্ষস্থানীয় মার্কিন কর্মকর্তা হিসেবে ক্যাম্পবেলের বক্তব্য একেবারেই স্পষ্ট। তিনি কার্যকরভাবে যুক্তি দিচ্ছেন, ইসরায়েলের বর্তমান সামরিক কৌশল সেই ফল বয়ে আনবে না যা দেশটি চায়।
যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামিতে ন্যাটোর ইয়ুথ সামিটে ক্যাম্পবেল বলেন, ‘বিজয়ের এই তত্ত্বটা আদতে কী তা বুঝতে কিছু ক্ষেত্রে আমাদের কাঠখড় পোড়াতে হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘কোনো কোনো সময় আমরা যখন কাছে থেকে ইসরায়েলি নেতাদের কথা শুনছি, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাঁরা রণক্ষেত্রে একচেটিয়া বিজয়, নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা নিয়ে কথা বলেন।’
এ মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি মনে করি না, এটা (নিরঙ্কুশ বিজয়) হতে যাচ্ছে বা সম্ভব বলে আমরা বিশ্বাস করি। নাইন-ইলেভেনের (সন্ত্রাসী হামলা) পর আমরা নিজেদের যে পরিস্থিতির মধ্যে পেয়েছিলাম, এটা দেখতে অনেকটা ওই রকম; যেখানে বেসামরিক লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া এবং ব্যাপক সহিংসতার পরও বিদ্রোহ অব্যাহত রয়েছে।’
এমন সময় ক্যাম্পবেল এমন মন্তব্য করেছেন, যখন গাজা উপত্যকার সবচেয়ে দক্ষিণের শহর রাফায় বড় ধরনের সামরিক অভিযান না চালাতে ইসরায়েলকে সতর্ক করছে ওয়াশিংটন। চলমান যুদ্ধের কারণে ইতিমধ্যে বাস্তুচ্যুত হওয়া ১০ লাখের বেশি মানুষ সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন।
চলমান সংকটের সমাধানের বিষয়ে ক্যাম্পবেল বলেন, ‘আমি মনে করি, রাজনৈতিকভাবেই এর সমাধান করতে হবে বলে আমাদের মত যা অতীতের অবস্থান থেকে আলাদা। বিশ্বের আরও অনেক দেশও এই রাজনৈতিক সমাধানের দিকে অগ্রসর হতে চায়, যেখানে ফিলিস্তিনিদের অধিকার আরও সুরক্ষিত হবে।’
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র হামাস নেতাদের অবস্থান সম্পর্কে ইসরায়েলকে গোয়েন্দা তথ্য প্রদান স্থগিত রাখবে- এমন খবর নাকচ করে দিয়েছে হোয়াইট হাউজ। একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, রাফার পরিকল্পিত অভিযান সীমিত পর্যায়ে রাখলেই কেবল ইসরায়েলকে তাদের বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য দেবে যুক্তরাষ্ট্র।
বার্তা সংস্থা জিউইশ টেলিগ্রাফিক এজেন্সিকে হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘যাদের নির্দেশনায় ৭ অক্টোবরের নৃশংস সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে, হামাসের সেসব জ্যেষ্ঠ নেতাদের খুঁজে বের করতে ইসরায়েলের সঙ্গে দিনরাত কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র।’