চট্টগ্রামরাউজান

তিন দিন ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ৩০টি গ্রাম, দুর্ভোগে ৫৫ হাজার গ্রাহক

কালবৈশাখী ঝড় হয়েছে গত সোমবার। টানা তিন দিন পেরিয়েও বিদ্যুৎ–সংযোগ ফেরেনি চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের অন্তত ৩০টি গ্রামে। ঝোড়ো হাওয়ায় পল্লী বিদ্যুতের ৮৫টি খুঁটি ভেঙে ও বিদ্যুৎ–লাইনের তার ছিঁড়ে এসব এলাকার বিদ্যুৎ–বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত গ্রামগুলোতে সংযোগ চালু করতে পারেনি পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। ফলে দুর্ভোগে পোহাচ্ছেন পল্লী বিদ্যুতের প্রায় ৫৫ হাজার গ্রাহক।

গতকাল বুধবার বিকেলে সরেজমিনে পাহাড়তলী, কদলপুর, বাগোয়ান, পূর্বগুজরা, পশ্চিম গুজরা, উরকিরচর, বিনাজুরী ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন গ্রামীণ সড়কে পল্লী বিদ্যুতের তারসহ খুঁটি ভেঙে মাটিতে পড়ে রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বড় বড় গাছ বিদ্যুতের তারের ওপর হেলে রয়েছে। তবে কাপ্তাই সড়কের পাহাড়তলী উত্তর দেওয়ানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় তারে হেলে পড়া গাছ কেটে সরিয়ে নেওয়ার কাজ করতে দেখা যায় পাঁচ থেকে সাতজন শ্রমিককে। কিন্তু পল্লী বিদ্যুতের কোনো কর্মী সেখানে ছিলেন না।

পাহাড়তলী ইউনিয়নের দেওয়ানপুর গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জয় দাশ বলেন, গত তিন দিন তাঁরা অন্ধকারে আছেন। ফ্রিজের খাদ্যসামগ্রী নষ্ট হয়ে খাদ্যসংকটে পড়েছেন। মোটর দিয়ে পানি তুলতে না পারায় গোসল করতে পারছেন না। বাইরে থেকে পানি এনে কাজ করতে হচ্ছে।

একই অবস্থা শেখ পাড়া, খান পাড়া, খৈয়াখালী, মহামুনি, উনসত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্দাদেরও। রাউজান পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ কর্তৃপক্ষ বলছে, রাউজানের ৩০ শতাংশ গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে। উপজেলায় মোট ৮৫টি খুঁটি ভেঙেছে। তার ছিঁড়েছে অসংখ্য। হঠাৎ করে এত খুঁটি এক সঙ্গে বসানো কঠিন কাজ। তারেরও সংকট রয়েছে। আবার নতুন খুঁটি বসানোর কাজ করেন ঠিকাদারেরা। ফলে কবে নাগাদ বিদ্যুৎ–সংযোগ সচল হবে, সেই নিশ্চয়তাও দিতে পারছেন না তাঁরা।

চট্টগ্রাম-২ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন রাউজানের নোয়াপাড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী উপব্যবস্থাপক অসিত কুমার সিকদার বলেন, তাঁদের মোট ৫৫ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন আছে। আজ সকাল থেকে দুইটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোক খুঁটি স্থাপনে কাজ করছেন। শতাধিক কর্মী দিন-রাত বিভিন্ন এলাকায় কাজ করছেন। যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যুৎ–সংযোগ চালু করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *