শেষ মুহূর্তে ভিড় প্রসাধনীর দোকানে
তাসলিমা ও নারগিস দুইজনে একটি ঝুড়িতে তিন কালারের তিনটি লিপিস্টিক, দুটি মেহেদি, কয়েকটি চোখের আইসেড, একটি ব্লাশন ও কয়েকটি ফেসিয়াল ক্রিম তুলে রাখেন। মূলত তাদের যা যা প্রয়োজন এবং পছন্দ তা-ই দুই বোনে খুঁজে খুঁজে সংগ্রহ করছেন ঝুড়িতে। এরপর পেমেন্ট করবেন এমনটাই বলেন তারা। শুধু তারা দুই বোনই নয়, ঈদে নতুন পোশাকের সাথে পরিপাটি সাজে নিজেকে উপস্থাপন করার জন্য রোজার শেষ মুহূর্তে নারীরা এখন ভিড় করছেন বিভিন্ন কসমেটিক্স ও জুয়েলারির দোকানে। পোশাকের সঙ্গে মানানসই ডিজাইনের আল্পনা আঁকতে ঈদের এসময় নারীদের পছন্দে প্রথম স্থানে রয়েছে মেহেদি। তারপর বাড়তি নজর ত্বকের যত্নে।
গত শনিবার নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজারের আমতল এলাকার পাইকারি কসমেটিক্সের স্টল ‘কাজী স্টোর’এ গিয়ে এ নারীদের এমন ভিড় দেখা যায়। এখানে নারী-পুরুষের দেশি-বিদেশি ব্র্যান্ডের নানারকম প্রসাধনী সামগ্রী রয়েছে। একারণে চট্টগ্রামের নারীদের কাছে বেশ পরিচিত এ স্টোরটি।
এখানের নারী ক্রেতারা বলেন, ঈদের পোশাকের কেনাকাটা প্রায় শেষ। এখন জুতা ও কসমেটিক্স কেনার পালা। একারণেই ভিড় জমেছে কসমেটিক্সের দোকানে। নগরীর কাজীর দেউড়ি ভিআইপি টাওয়ারের পাইকারি কসমেটিক্সের দোকান আল মদিনায় কসমেটিক্স কেনায় নারীদের ছিল উপছে পড়া ভিড়। বিক্রেতাদেরও যেন দম ফেলার সময় নেই এখন।
আল মদিনার বিক্রয়কর্মী নাজনিন সুলতানা বলেন, গত কয়েকদিন ধরে কসমেটিক বেচাকেনা বেড়েছে। এসময় মেয়েরা বেশি কিনছেন সাজের প্রসাধনীসামগ্রী। আবার স্ক্রিন ফর্সাকারি ক্রিমগুলোও বেশি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কিছু ফেসিয়াল ক্রিম, মেহেদি ও মেহেদি স্টিকার বেশি বিক্রি হচ্ছে। এবারে ক্রেতারা বিদেশি প্রসাধনীসামগ্রীর পাশাপাশি সমান তালে দেশীয় ব্র্যান্ড মমতাজ, হারবাল, আইয়ুরের প্রোডাক্টগুলোও কিনছেন। বিদেশি ব্র্যান্ডে প্রসাধনীগুলোর দাম অনেক বেশি। তবে দেশীয় প্রসাধনীসামগ্রীর দাম তুলনামূলক কম।
এখানে ক্রেতা অহনা রহমান বলেন, মমতাজের শ্যাম্পু, দুইটা মেহেদি ও তিনটা ম্যাসাজ ক্রিম কিনেছি। কারণ ঘরে বসে নিজে নিজেই ফেসিয়াল করবো। পার্লারে একটা ফেসিয়াল ৮শ’ থেকে ১৫শ’ টাকার বেশি রাখে। এছাড়া মেনিকিউর-পেডিকিউরও ঘরে বসে করে ফেলবো। তাই মমতাজ ব্যান্ডের পণ্যগুলো কিনলাম।
চকবাজারের বালি আর্কেট মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, কসমেটিকের সব দোকানেই কেনাকাটা তুঙ্গে। ঠাঁই নেই কোনো দোকানে। এখানে নারীদের রূপচর্চায় প্রসাধনীসামগ্রীর জন্য রয়েছে ৭টির বেশি আউটলেট। এগুলোতে রয়েছে দেশি- দিবেশি উন্নতমানের প্রসাধনীসামগ্রী। স্ক্রিনক্রিম, ফেসওয়াশ, ফেসক্রিম, বডি ক্রিম- লোশন, তেল, শ্যাম্পুসহ লিপিস্টিক, আইলাইনার, মেহেদি এবং বিভিন্ন উপকরণ কেনাকাটায় ব্যস্ত তরুণীরা। এখানের ‘আল্টিমেট কুইন’ আউটলেটে কসমেটিক্স কিনতে আসেন ফারজানা আক্তার। তিনি বলেন, আমি বোয়ালখালী থেকে শুধু কসমেটিক্স কিনতেই এখানে এসেছি। কারণ এখানের কসমেটিক্সগুলো ব্যবহার করে আমার খুব ভালো লেগেছে। এছাড়া ঈদের সময় সাজে যেন কোনো খুঁত না থাকে তাই ভালোমানের কসমেটিক্স কিনতে এখানে আসছি।
মিমি সুপার মার্কেটেও একই চিত্র দেখা যায়, জে. এস স্টোর’স এর মালিক মোহাম্মদ মিজান বলেন, এখন কসমেটিক্সের পাশাপাশি কানের দুল, হাতের বেসলেট, চুড়ি, ফিঙ্গার রিং, পায়ের নুপুর, গলার নেকলেজসহ বিভিন্ন রকম জুয়েলারি বিক্রি হচ্ছে। আমাদের এখানে এন্ট্রিক, পাথর ও গোল্ডপ্লেটের উন্নত মানের কালেকশন আছে। সব রকমের জুয়েলারিই কিনছেন ক্রেতারা।