চট্টগ্রাম

ওয়াসার বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক বদলিতেই পার পেলেন 

চট্টগ্রাম ওয়াসার বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক আবু সাফায়াত মোহাম্মদ শাহেদুল ইসলামকে বদলি করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। তার নতুন কর্মস্থল শিপিং কর্পোরেশনে। কিন্তু বদলি হলেও তার ‘দুর্নীতি’র তদন্ত চান ঠিকাদাররা।

ঠিকাদারদের অভিযোগ, ওয়াসার প্রতিটি বিল থেকে ১ শতাংশ কমিশন নিতেন শাহেদুল। কমিশন না দিলে ফাইল আটকে রাখতেন দীর্ঘদিন। এভাবে তার কাছে জিম্মি হয়ে পড়েন ঠিকাদাররা।তবে শাহেদুল ইসলাম দাবি করেন, তিনি নিয়ম বহির্ভূতভাবে কোনো ফাইলে স্বাক্ষর করেননি বলেই ওয়াসার কিছু অসাধু কর্মকর্তার ইন্ধনে তার পেছনে লাগে ঠিকাদাররা।

জানা গেছে, ‘চট্টগ্রাম ওয়াসা ঠিকাদার সমিতি’র প্যাডে বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক কর্তৃক হয়রানি প্রসঙ্গে চলতি বছরের ১১ এপ্রিলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সমিতির সদস্যরা পাইপলাইন মেরামতের কেমিক্যাল সরবরাহ করে আসছে দীর্ঘ ২০ বছরেরও বেশি সময়। কিন্তু বিভিন্ন কাজের বিলের ফাইল হিসাব শাখায় যাওয়ার পর বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক বিভিন্নভাবে হয়রানি করেন। দিনের পর দিন ফাইল আটকে রাখেন। ফাইলের জন্য চুক্তিমূল্য অনুসারে সুবিধা দাবি করেন। অনেক সময় বিলের ফাইলে সই দিলেও চেকে করেন না।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক সরাসরি ঠিকাদারকে বলেন, ১ শতাংশ কমিশন দিলেই বিলে সই করবেন। যারা তার শর্তানুযায়ী কমিশন প্রদান করতে রাজি হন, তাদের চেকে সই করেন তিনি।

এরপর দুই প্রতিষ্ঠানের বিলের দুটি ফাইলে স্বাক্ষর হতে দেরি হওয়ার কারণ জানতে চেয়ে তাকে শোকজ করেন তৎকালীন চট্টগ্রাম ওয়াসার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (অর্থ) মো. ছামছুল আলম।সেসময় জবাবে বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক শাহেদুল হাইপ্রোফাইল ঠিকাদারের মারমুখি আচরণ ও অনৈতিক চাপের বিষয়টি জানান।

জবাবে শাহেদুল ইসলাম আরও জানান, ফাইল স্বাক্ষর না করলে সংশ্লিষ্ট হুমকি-ধমকি, চাপ প্রয়োগ, এমনকি অফিস কক্ষের দরজায় লাথি মারার ঘটনাও ঘটেছে। ওয়াসার কিছু অসাধু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার উস্কানিতে ঠিকাদাররা তার সঙ্গে এমন আচরণ করার সুযোগ পাচ্ছেন।

এম জামাল অ্যান্ড কোং লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানটি ২০১৯ সালে প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ওয়াসার দুটি বেসমেন্ট এবং তিনতলা ভবন নির্মাণকাজ পায়। ওয়াসার তৎকালীন উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (অর্থ) মো. ছামছুল আলম প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ নিয়ে বিল ছাড়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। পরিচালককে (অর্থ) নিজের আত্মীয় বলে জাহির করতো প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু সরকারি বিধান অনুযায়ী ঠিকাদারদের বিল প্রদানের জন্য ২৮ দিন সময় দেওয়া থাকলেও চটগ্রাম ওয়াসার কিছু ঠিকাদার সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে নারাজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *