চট্টগ্রামে গাছ কেটে র্যাম্প নয়, দুই মন্ত্রীর নির্দেশ
নগরের টাইগারপাস থেকে পলোগ্রাউন্ড পর্যন্ত মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী সড়কে শতবর্ষী গাছ কেটে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্প নির্মাণের সব উদ্যোগ বাতিল করতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (সিডিএ) নির্দেশ দিয়েছেন দুই মন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বুধবার টেলিফোনে সিডিএর প্রধান প্রকৌশলীকে এই নির্দেশনা দেন।
আন্দোলনকারীদের অনড় অবস্থানের মুখে মঙ্গলবার বিকেলেই মত বিনিময় সভা শেষে র্যাম্প নির্মাণের পরিকল্পনা স্থগিত করার কথা জানিয়েছিল সিডিএ।
এরপর বুধবারই দুই মন্ত্রী টেলিফোন করে সিডিএকে ওই পরিকল্পনা বাদ দিতে বলেন।
নির্দেশনার বিষয়ে সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, “গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ক্লিয়ার মেসেজ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, পাহাড় কেটে ও পরিবেশ ধ্বংস করে কোনো র্যাম্প নামানো যাবে না। গাছ কাটা পড়লে র্যাম্প নির্মাণ না করতে বলেছেন তিনি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ও আমাকে ফোন করেছেন। তিনি বলেছেন, গাছ কেটে এবং দ্বিতল সড়ক নষ্ট হয়, এমন কোন কিছু করা যাবে না। দুই মন্ত্রীই বলেছেন দ্বিতল সড়কের সৌন্দর্য্য নষ্ট করা যাবে না।
চট্টগ্রাম নগরের লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করেছে সিডিএ। মূল এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ি ওঠানামার জন্য ১৫টি র্যাম্প রয়েছে। এর মধ্যে দুটি আছে নগরের টাইগারপাসে। দুটি র্যাম্পের মধ্যে টাইগারপাস থেকে পলোগ্রাউন্ড পর্যন্ত মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী সড়কে গাড়ি ওঠার র্যাম্প নির্মাণ করা হবে।
সবুজে ঘেরা অনন্য এই সড়কের একটি অংশ গেছে পাহাড় ঘেঁষে। আরেকটি অংশ নিচে। মধ্যবর্তী পাহাড়ি ঢালে রয়েছে ছোট-বড় শতাধিক বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। এসব গাছে রয়েছে নানা প্রজাতির পাখির বাসা। এখন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্প (গাড়ি ওঠার পথ) নির্মাণ করতে গাছগুলো কাটতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। ইতিমধ্যে গাছগুলো লাল ও সাদা কালি দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে।
নগরের দ্বিতল সড়ক হিসেবে পরিচিত এই এলাকায় শতবর্ষী গাছসহ ৪৬টি গাছ কেটে মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী-সিডিএ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্প নির্মাণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সিডিএ। কিন্তু দ্বিতল সড়ক এলাকায় গাছ কেটে র্যাম্প নির্মাণের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে গত সোমবার আন্দোলন শুরু করেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও পরিবেশকর্মীরা। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সভা করে নকশা সংশোধনের আশ্বাস দিয়েছে সিডিএ।