চট্টগ্রাম

তরমুজ চাষ, ৩০ হাজার খরচ করে দেড় লাখ আয়

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপকূল রায়পুর ইউনিয়নে তরমুজ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। আবহাওয়া ও পরিবেশ তরমুজ চাষের বেশ উপযোগী। এ ছাড়া কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় কৃষকরা দিন দিন সুস্বাদু মিষ্টি তরমুজ চাষের দিকে ঝুঁকছেন।

গত বছর বাম্পার ফলন ও দাম ভালো হওয়ায় এ বছর ৪২ হেক্টর জমিতে আবাদ করছেন তারা। তবে অসময়ে বৃষ্টিতে চাষীরা বেশ ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলে জানান। নভেম্বরে চারা রোপণ করে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি ফলন আসে। পারকি সৈকতের ফুলতলী ও শঙ্খ নদীর মোহনায় গত ১৫ বছর ধরে চলছে তরমুজ চাষ। এ ছাড়াও হাইলধর, বারখাইন, চাতরী, জুইদন্ডী ও পরৈকোড়া ইউনিয়নে তরমুজ চাষ করা হয়েছে।

রোববার সকালে সরেজমিনে উপজেলার পারকি সৈকতের ফুলতলী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, চাষিরা ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত। ক্ষেতে তরমুজ পাকা শুরু করেছে। কিছু কিছু গাছ ফুল ও ফলসহ মারা গেছে। অধিকাংশ গাছে ফুল ও ফলে ভরে গেছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, আনোয়ারা উপকূলে ১৫ বছর ধরে তরমুজের চাষ করছে কৃষকরা, এখানকার আবহাওয়া ও মাটি ভাল হওয়ায় ফলনও ভাল হয়, চলতি বছর উপজেলার রায়পুর, বারশত, হাইলধর, বরুমচড়া, বারখাইন, জুইঁদন্ডী ও চাতরী ইউনিয়নে ৪২ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ করা হয়। গ্লোরী, সুইট ড্রাগন, বিগ ফ্যামমেলি, চ্যাম্পিয়ন ও পাকিজা জাতের তরমুজ এখানে বেশি হয়। চাষিদের মধ্যে রয়েছে আইয়ুব, আবদুস সবুর, ফোরকান, মোতালেব, নুরুল আলমসহ অন্তত ১৫ জন কৃষক ৩০ কানি জমিতে তরমুজ চাষ করেছে। উৎপাদিত তরমুজের ফলন সাইজে যেমন বড় তেমনি মিষ্টিও। তাই এলাকায় এ তরমুজের চাহিদাও দিনদিন বেড়ে যাচ্ছে।

চাষিরা জানান, পানি ও বীজ সমস্যা দূরীকরণে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ফেলে এ এলাকার উৎপাদিত তরমুজ দেশের চাহিদা মিটাতে যেমন বড় ভূমিকা রাখবে তেমনি কৃষকেরাও অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে।

ফুলতলী এলাকার তরমুজ চাষি নুরুল আলম (৫৫) বলেন, ৪০ শতক জমিতে তরমুজ চাষ করেছি, সব মিলে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে, আবহাওয়া ঠিক থাকলে এক থেকে দেড় লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করা যাবে।

তবে চাষি আশরাফুজ্জামান (৫৮) বলেন, অসময়ে বৃষ্টিতে বেশ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। অনেক গাছ ফল ধরা অবস্থায় মারা গেছে। ৩ কানি জমিতে লক্ষাধিক টাকা খরচও হয়েছে। আবারও চারা লাগিয়ে লাভের আশা দেখছি।

রায়পুর ইউপি চেয়ারম্যান আমিন শরীফ জানান, উপকূলের ফুলতলী মৌজা ও পূর্বগহিরা সঙ্খ নদীর মোহনায় উৎপাদিত তরমুজ মিষ্টি ও সুস্বাদু হওয়ায় এলাকার মানুষের মাঝে বেশ কদর বেড়েছে। সরকারি সহযোগিতা পেলে এ অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বাজারের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে।

আনোয়ারা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমজান আলী বলেন, আনোয়ারা উপকূলে তরমুজ উৎপাদন দিনদিন বাড়ছে। গত বছর ৩০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ করলেও এ বছর ৪২ হেক্টর জমিতে কৃষকরা তরমুজ চাষ করেছে। এখানকার আবহাওয়া ও মাটি তরমুজ চাষের উপযোগী। উৎপাদিত তরমুজ সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে এ তরমুজের চাহিদাও বেশি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *