চট্টগ্রামপটিয়া

পটিয়া ক্রীড়া সংস্হার কমিটি বাতিলের দাবি

পটিয়া ক্রীড়া সংস্থার নতুন কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়েছে ক্রীড়ামোদিরা। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কমিটি গঠন করা হয়নি বলে অভিযোগ করে তাঁরা এ কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।

গত ২২ ফেব্রুয়ারি পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন ভূঞা জনী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে কমিটি ঘোষণা করা হয়। ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে কমিটির কথা জানাজানি হয়। এরপর থেকে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ২৫ সদস্যের এ কমিটি করা হয়েছে কোন ধরনের নির্বাচন প্রক্রিয়া ছাড়াই— এ নিয়েই অসন্তুষ্ট সবাই।

এদিকে, কমিটির ঘোষণার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে পদত্যাগ করেছেন নতুন কমিটির নির্বাহী সদস্য পৌর আ’লীগ নেতা নাজিম উদ্দীন পারভেজ। আগের কমিটিতে যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন তিনি।

কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়ে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক রবাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন পটিয়ার ৮ টি ক্লাবের প্রতিনিধিরা। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি তারা এ অভিযোগ জমা দেন।

উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক নির্বাহী সদস্য ও শেখ রাসেল ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক পুলক চৌধুরী বলেন, কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে পটিয়া উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার অনুমোদিত ফুটবল ও ক্রিকেট লীগে অংশগ্রহণকারী দল সমূহের সাথে কোন যোগাযোগ করা হয়নি এমনকি ক্লাবের প্রতিনিধিদের এখানে রাখা হয়নি। আমি এই কমিটি বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।

সদ্য পদত্যাগ করা ক্রীড়া সংগঠক নাজিম উদ্দীন পারভেজ বলেন, আমি পটিয়ার ক্রীড়া অঙ্গনের সাথে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত। প্রথমে আমি সংস্থার অর্থ সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। আমরা ধীরে ধীরে পটিয়ার ক্রীড়া অঙ্গনকে ঢেলে সাজাতে কাজ করেছি। যার ফসল হিসেবে সারা দেশের একমাত্র উপজেলা হিসেবে প্রথম ডিভিশনে খেলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। এরপর প্রিমিয়ার ডিভিশনে খেলা। ক্রীড়া অঙ্গনকে ঢেলে সাজাতে হলে ক্রীড়া অঙ্গনের মানুষ প্রয়োজন। বিগত দিনে আমরা ক্রীড়া অঙ্গনের লোকজনদের নিয়ে কাজ করেছি। পটিয়া মাঠকে আমরা সবসময় নানা খেলাধুলায় ভরপুর রেখেছি।

‘আগের কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পটিয়া ক্রীড়া সংস্থার নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে আমরা জানিনা। কে করেছে, কারা করেছে তা আমি অবগত নই। আমি যেহেতু পূর্বের কমিটির ১ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলাম, নতুন কমিটি করতে আমাদের সাথেও কথা বলার প্রয়োজন মনে করেনি। কথা ছিল এবারের কমিটি নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করার। কিন্তু নির্বাচন ছাড়া এ কমিটিতে আমাকেও নির্বাহী সদস্য পদে রাখা হয়েছে।

এ ব্যাপারে পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি মো. আলাউদ্দিন ভূঞা জনী বলেন, উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচন পূর্বের কমিটিতেও হয়নি, এবারও হয়নি। গঠনতন্ত্র মোতাবেক ২৫ সদস্যের একটি কার্যকরী কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় গঠনতন্ত্র মোতাবেক হয়নি বলে একজন নির্বাহী সদস্যের পদত্যাগের বিষয়টি জানা নেই।

নতুন কমিটিতে প্রধান উপদেষ্টা করা হয়েছে স্থানীয় সংসদ সদস্য মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, উপদেষ্টা করা হয়েছে জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক সত্যজিৎ দাশ রুপু ও পটিয়া পৌর মেয়র আইয়ুব বাবুলকে। পদাধিকার বলে পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সভাপতি।

দক্ষিণ ভূর্ষি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সেলিম, পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিপুণ চৌধুরী ও কাউন্সিলর গোফরান রানাকে করা হয়েছে সহ-সভাপতি।

সাধারণ সম্পাদক পদে নুরুল করিমকে , অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক পদে কুসুমপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকারিয়া ডালিমকে, যুগ্ম সম্পাদক পদে আবুল কালাম বাবুল ও হাজী আবুল বশরকে রাখা হয়েছে।

প্রদীপ বিশ্বাসকে কোষাধ্যক্ষ, নির্বাহী সদস্য করা হয়েছে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা, অধ্যাপক হারুনুর রশিদ, আলহাজ্ব বদিউল আলম, মিয়া মোহাম্মদ আরিফ, ডি এম জমির উদ্দীন, নাজিম উদ্দীন পারভেজ, মিসকাত আহমেদ, সর্ব কনিষ্ঠ সদস্য হয়েছেন শাহরিয়ার শাহজাহান, আব্দুল কাদের। নির্বাহী সদস্য (মহিলা) করা হয়েছে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ইয়াসমিন আকতার চৌধুরী ও নারী নেত্রী মাজেদা বেগম চৌধুরীকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *