স্বাস্থ্য

ক্যানসার চিকিৎসায় নতুন ট্যাবলেট আনছে ভারত, হাতের নাগালেই দাম

ক্যানসারের চিকিৎসায় নতুন এক ওষুধ আনতে যাচ্ছে ভারতের শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান টাটা মেমোরিয়াল সেন্টার (টিএমসি)। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা এমন একটি চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন, যা রোগীর দ্বিতীয়বার ক্যানসার আক্রান্ত হওয়া ঠেকাবে।

ঘোষণা অনুযায়ী, এই চিকিৎসায় যে ট্যাবলেট ব্যবহার করা হবে, তার দামও থাকছে হাতের নাগালে, মাত্র ১০০ রুপি। খবর ভারতের বহুল প্রচারিত সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস ও এনডিটিভির।

নতুন এই চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ ক্যানসার চিকিৎসক রাজেন্দ্র বাদভে। গবেষণা দলে যুক্ত এই চিকিৎসক জানিয়েছেন, তাদের আবিষ্কৃত নতুন ট্যাবলেটটি যে শুধু দ্বিতীয়বারের মতো ক্যানসার আক্রান্ত হওয়া থেকে ঠেকাবে, তা নয়; এর সঙ্গে ক্যানসারের চিকিৎসার যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে, তারও প্রভাব কমবে রোগীর শরীরে।

গবেষক দলের দাবি অনুযায়ী, রোগীর শরীরে কেমোথেরাপি বা রেডিয়েশনের মতো চিকিৎসাপদ্ধতির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ৫০ শতাংশ কমে আসবে এই ট্যাবলেট সেবনে।

গবেষকেরা জানিয়েছেন, এই ওষুধ তৈরির জন্য মানুষের ক্যানসার কোষ ইঁদুরের মধ্যে ঢোকানো হয়েছিল। এরপর ইঁদুরগুলোর শরীরে টিউমারের জন্ম নেয়। এরপর সেই ইঁদুরগুলোর অপারেশন হয়, কেমোথেরাপি এবং রেডিয়েশনও হয়। দেখা গেছে, এই ক্যানসার কোষ যখন মরে যায়, তা ক্রোমাটিন নামে ছোট ছোট বস্তুতে পরিণত হয়ে রক্তের মাধ্যমে শরীরের অন্যত্র চলে যায় এবং পরবর্তী সময়ে সুস্থ কোষে প্রবেশ করে ক্যানসার সেলে পরিণত করতে পারে। পরবর্তী ক্যানসার সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে ১০ বছর ধরে গবেষণা করেছেন ভারতের এই বিজ্ঞানীরা।

তবে, এখনই মানবদেহের ওপর এই ওষুধের ট্রায়াল শুরু করার সময় আসেনি বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। তারা বলছেন, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার প্রভাব ইঁদুর এবং মানুষ- উভয়ের ওপর পরীক্ষা করা হয়েছে, তবে প্রতিরোধ পরীক্ষাটি শুধুমাত্র ইঁদুরের উপর করা হয়েছে। মানবদেহে পরীক্ষা শেষ করতে আরও প্রায় পাঁচ বছর সময় লাগবে। গবেষণাটি বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। গবেষণা চলাকালে বিভিন্ন সময়ে অনেকেই মনে করেছিল এটি সময় এবং অর্থের অপচয়। কিন্তু আজ সবাই খুশি এবং উত্তেজিত। চিকিৎসা বিজ্ঞানে বড় একটি সাফল্য হয়ে ধরা দিতে যাচ্ছে তাদের নতুন আবিষ্কারটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *