দেশজুড়ে

পদ্মায় নাব্য সংকটে ১০ দিন ধরে আটকা ভারতীয় পণ্যবাহী জাহাজ

নদীতে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় নাব্য সংকটের কারণে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পদ্মা নদীর হাকিমপুর চরে ১৮৩ টন পাথর বোঝাই একটি জাহাজ আটকে পড়েছে। জাহাজটি ভারতের ময়া থেকে রাজশাহীর সুলতানগঞ্জ আসছিল। নতুন এ রুটটি পরীক্ষামূলকভাবে চালুর মধ্যেই গত ৯ দিন ধরে ময়া-সুলতানগঞ্জের নৌপথের পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে।

শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে বিআইডব্লিউটিএর ক্রয় ও সংরক্ষণ বিভাগের পরিচালক রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পাথর বোঝাই ‘এমভি আতিয়া’ জাহাজটি রওনা হয় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি। মেঘনা ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে এ পাথর আমদানির এলসি খোলেন মনিরুজ্জামান নামের এক ব্যবসায়ী। কিন্তু সুলতানগঞ্জ ঘাট থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে বাংলাদেশ সীমান্তে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পদ্মা নদীর হাকিমপুর চরে এসে জাহাজটি আটকা পড়ে। নদীর নাব্যতা কম হওয়ায় এ অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। এতে এই নৌপথ দিয়ে কোনো জাহাজ চলাচল করতে পারছে না।

আমদানিকারক মনিরুজ্জামান বলেন, ‘এ ধরনের জাহাজ চলাচলের জন্য পানির গভীরতা কমপক্ষে সাত ফুট হতে হয়। কিন্তু হাকিমপুর চর এলাকায় পানির গভীরতা আছে সাড়ে চার ফুটের মতো। এ কারণে পাথরবাহী জাহাজটি আটকে যায়। ওই জাহাজের পাথর বিকল্প উপায়ে আনতে ২০ ফেব্রুয়ারি সোনামসজিদ স্থলবন্দরের উপ-কাস্টমস কমিশনারের কাছে লিখিত আবেদন করেছি। তবে এখনো কোনো সাড়া পাইনি। এ বিষয়ে সোনামসজিদ স্থলবন্দরের কাস্টমস বিভাগের উপ-কমিশনার নুর উদ্দিন মিলন বলেন, পণ্যবাহী জাহাজ লোড-আনলোডের সিদ্ধান্ত দেওয়ার এখতিয়ার আমার নেই। তাদের আবেদনের পর রাজশাহীর কাস্টমস কমিশনারের কার্যালয় থেকে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিআইডব্লিউটিএর ক্রয় ও সংরক্ষণ বিভাগের পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, এ নৌপথের একটি অংশে সামান্য নাব্য সংকট রয়েছে। পানির গভীরতা সাড়ে পাঁচ ফুটের বেশি লাগে এমন জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখতে বলা হয়েছিল। আমদানিকারক সম্ভবত সেই নির্দেশনা মানেননি।

সোনামসজিদ স্থলবন্দর পাথরসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানিকারক আব্দুল আওয়াল জানান, ১৮৩ মেট্রিক টন পাকুড় স্টোন চিপস বোঝাই এই জাহাজটি ভারতের মায়া বন্দর থেকে ছেড়ে আসে। জাহাজটি বাংলাদেশের সুলতানগঞ্জ ঘাটে আসার পথে নদীতে পানি কম থাকার কারণে আটকে যায়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী। এখন নৌকায় করে পণ্য খালাস করতে হবে। আর তাতে খরচও বাড়বে, এবং ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

প্রসঙ্গত মায়া বন্দর থেকে সুলতানগঞ্জের নৌপথে জাহাজ চলাচল এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে আছে। আপাতত তিনটি জাহাজ চলাচল করে। এমধ্যে একটি আটকা পড়েছে। বাকি দুটির মধ্যে একটি ময়ায়, আরেকটি আছে সুলতানগঞ্জে। আটকে পড়া জাহাজটি ঘাটে ফিরলে ফের চলাচল স্বাভাবিক হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *