আইন-আদালতচট্টগ্রাম

আদালতে আলামত দাখিলে ৭ দিনের সময় পিবিআইকে

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রুবেল দের মৃত্যুর ঘটনায় স্ত্রীর করা মামলায় গুরুত্বপূর্ণ আলামত জব্দের আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। একইসাথে ৭ সাত দিনের মধ্যে আলামত সংগ্রহ করে আদালতে দাখিলের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (১৩ মার্চ) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. জেবুননেছা বেগমের আদালত এ আদেশ দেন।

আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী অজয় ধর।

তিনি বলেন, গত ১১ তারিখ আদালতের কাছে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে সুরতহাল রিপোর্ট, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট তলব করে জুডিশিয়াল কাস্টডিতে সংযুক্তি এবং সিসিটিভি ফুটেজসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আলামত দ্রুত জব্দের আদেশ প্রার্থনা করা হয়েছিলো। সেই আবেদন গতকাল (বুধবার) বিজ্ঞ আদালত মঞ্জুর করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে মামলার গুরুত্বপূর্ণ আলামত সংগ্রহ করে আদালতে দাখিল করতে আদেশ দিয়েছেন।

এর আগে, গত ২০ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. জেবুননেছা বেগমের আদালতে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপারসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেন মৃত বন্দি রুবেল দে’র স্ত্রী পূরবী পালিত।

মামলার আরও আসামি করা হয়— বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আছহাব উদ্দিন, পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম, উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু মুসা, সাইফুল ইসলাম ও রিযাউল জব্বার, কনস্টেবল কামাল ও আসাদুল্লাহ, থানায় সেসময় দায়িত্বরত ডিউটি অফিসার এবং কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মুহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন, জেলার এমরান হোসেন মিয়া, ডেপুটি জেলার নওশাদ মিয়া, আখেরুল ইসলাম, সুমাইয়া খাতুন, মো. ইব্রাহিম ও কারা ওয়ার্ড মাস্টারকে।

মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৭ জানুয়ারি বিকেল ৩টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়। রাত ৮টায় তার বিরুদ্ধে মদ উদ্ধারের ভুয়া মামলা সাজানো হয়। রাত ৯টার দিকে পুলিশ আবেদনকারীর মোবাইলে কল দিয়ে রুবেলকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য দুই লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন।

টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ২০০ লিটার চোলাই মদ উদ্ধার দেখিয়ে ভূয়া মামলা করা হয় অভিযোগ করে আবেদনে বলা হয়, পরদিন আদালত রুবেলকে হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। এ সময় গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় প্রিজন ভ্যানে করে তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

পরবর্তীতে ২ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রুবেলের পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য কারাগারে যান। কারারক্ষীরা মুমূর্ষু অবস্থায় রুবেলকে হুইল চেয়ারে করে নিয়ে আসেন। তখন রুবেলের কপালে, ডান চোখের ভ্রুয়ের ওপর রক্তাক্ত কাটা জখম এবং ‍মুখমণ্ডলে নীল ফোলা জখম দেখা যায়। তার মুখ দিয়ে অনবরত লালা ঝরছিল। প্রচণ্ড আহত ও নিস্তেজ অবস্থায় কথা বলার শক্তি তার ছিল না। ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টায় পূরবী খবর পান, তার স্বামী কারাগারে মারা গেছেন।

মামলার আবেদনের ১২ দিন পর গত ৩ মার্চ দুপুরে মামলার আবেদন আমলে নিয়ে বন্দী নির্যাতনের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা নিরূপণের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দায়িত্ব দেন আদালত।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে মৃত রুবেলের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের দক্ষিণ জৈষ্ঠ্যপুরা গ্রামে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *