চট্টগ্রামফটিকছড়ি

ফটিকছড়িতে দিনে ৪ ঘন্টাও মিলছে না বিদ্যুৎ, অতিষ্ঠ মানুষ

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার প্রায় সাত লাখ বাসিন্দা ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দৈনিক ৪ ঘন্টাও বিদ্যুৎ মিলছে না। এই রমজানে দিনে-রাতে কমপক্ষে ১২ থেকে ১৫ বার লোডশেডিং করা হচ্ছে। এমনকি বাদ যাচ্ছে না সেহরি ও ইফতারের সময়ও। এতে তারা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

উপজেলার নাজিরহাট এলাকার জে এন টাওয়ারের স্বত্বাধিকারী আলী আজম ছাদেক বলেন, এই পবিত্র রমজানে দিনে-রাতে সমানতালে বিদ্যুৎ যায়-আসে। কখনো এক ঘণ্টা আবার কখনো টানা দুই থেকে চার ঘণ্টা লোডশেডিং চলে। এ অবস্থায় ভোগান্তির শেষ নেই। তার মতে- দৌলতপুর, রোসাংগিরী, সুয়াবিল, নানুপুর, আবদুল্লাহপুর, সমিতিরহাট, বক্তপুর, ধর্মপুর এলাকাগুলো সদরের বাইরে বলে লোডশেডিং তুলনামূলক বেশি।

নানুপুর বাজারের ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, উপজেলা সদরে একটু বিদ্যুৎ গেলেই সেখানকার লোকজন বিদ্যুৎ কার্যালয়ে গিয়ে তাদের ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়া জানান। কিন্তু এখানকার লোকজন তা করতে পারে না বলে এখানে লোডশেডিং বেশি হয়।

পূর্ব ফরহাদাবাদ গ্রামের সার্ভেয়ার মুহাম্মদ রাশেদ সুজন ক্ষুদ্ধ কণ্ঠে বলেন, সরকার যে বলে, বিদ্যুৎ উৎপাদন করে দেশ ভরে গেছে, এখন এত বিদ্যুৎ কই? তার দাবি, এখন দৈনিক ৪ ঘন্টাই বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না।

আজিমনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আকতার বলে, সন্ধ্যার সময় প্রতিদিন কারেন্ট চলে যায়। হারিকেন জ্বালিয়ে পড়তে বসি। ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবক নুরনাহার বেগম বলেন, সন্ধ্যার পর বিদ্যুৎ থাকেনা বললেই চলে। এতে ঘরের কাজ থেকে শুরু করে বাচ্চাদের পড়াশোনা পর্যন্ত বন্ধ থাকে।

নাজিরহাট বাজারের ব্যবসায়ী শম্ভু কুমার শীল বলেন, চলতি গরমের মৌসুমের শুরু থেকে লোডশেডিং চরম আকার ধারণ করেছে। তিনি গত বছর এ সমস্যা তেমন ছিলনা বলে দাবি করেন। এ কারণে তার ব্যবহৃত কম্পিউটার ও লাইট-বাতিগুলো একাধিকবার নষ্ট হয়েছে বলে জানান।

আজাদীবাজারের ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম আকাশ বলেন, দিনের বেলায় জেনারেটর দিয়ে কোনোমতে এই মাহে রমজানে নিজের দোকান চালাই। এ ছাড়া মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে গরমে অতিষ্ঠ। তিনি আরও বলেন, ঝড়-বৃষ্টি ছাড়া আকাশে একটু মেঘ দেখা দিলেই বিদ্যুৎ চলে যায়।

চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. সারওয়ার জাহান লোডশেডিংয়ের কথা স্বীকার করে বলেন, উপজেলার চাহিদা ২৫ থেকে ২৮ মেঘাওয়াট। চাহিদার বিপরীতে গ্রীড থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ মেঘাওয়াট। শীঘ্রই এ সমস্যার সমাধান হবে বলে তিনি আশা করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *