জাতীয়

বন্ধুত্ব ও শ্রদ্ধাবোধ রাশিয়া-বাংলাদেশের সম্পর্কের প্রধান ভিত্তি

রাশিয়া-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত্তি হলো সমতা, বন্ধুত্ব ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, মস্কোতে বাংলাদেশ দূতাবাসের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের সংবর্ধনা সভায় এমন মন্তব্য করেন রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী মি. আন্দ্রেই ইউরেভিচ রুদেনকো।

মস্কোতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের ৫৩তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে মস্কোস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ১৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় স্থানীয় ফোর সিজনস হোটেলে এক সংবর্ধনা সভার আয়োজন করে।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রেই ইউরেভিচ রুদেনকো। বিশেষ আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন রাশিয়ার উপ-প্রতিরক্ষা মন্ত্রী কর্নেল জেনারেল মি. আলেকজান্ডার ফোমিন এবং মস্কো সিটি গভর্নমেন্টের মন্ত্রী মি. সের্গেই চেরেমিন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মস্কোতে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ ষাটের অধিক দেশের রাষ্ট্রদূত, স্টেট ডুমার সদস্য, রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সরকারী ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং রাশিয়ার শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা যোগ দেন।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী মি. আন্দ্রেই ইউরেভিচ রুদেনকো বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের বিশেষ ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে প্রতিষ্ঠিত দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিত্তি ছিল বন্ধুত্ব, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সমতা। যুদ্ধবিধ্বস্থ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি ১৯৭২-৭৪ সময়কালে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের মাইন অপসারণ ও ডুবে থাকা জাহাজ উত্তোলনে তৎকালীন সোভিয়েত নৌবাহিনী যে সফল অভিযান পরিচালনা করে, এ বছর তার ৫০ বছর পূর্তিতে বিশেষ আয়োজনের মাধ্যমে তা উদযাপিত হবে বলে তিনি ঘোষণা দেন।

মি. রুদেনকো ২০২৩ সালের ৫ অক্টোবর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাডিমির পুতিন ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অংশগ্রহণে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকন্দ্রের জন্য প্রথম পারমানবিক জ্বালানী হস্তান্তর উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানের কথা স্মরণ করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর করার ব্যাপারে একযোগে কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন। তিনি দুই দেশের মধ্যে চলমান ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নিয়ে তার সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং আগামী দিনে এর আকার ও পরিধি আরও বৃদ্ধিপাবে বলে আশা করেন। তিনি বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়া তথা আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায়ও বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা উল্লেখ করেন। বাংলাদেশ-রাশিয়া উভয়েই জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং বহুপাক্ষিক বিশ্বব্যবস্থা ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় দুই দেশই একসাথে কাজ করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *