চট্টগ্রাম

সিডিএ : এক যুগ পর জনবল বাড়ানোর উদ্যোগ

দীর্ঘদিন ধরে জনবল সংকটে থাকা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) অবশেষে জনবল বাড়াতে প্রস্তাব পাঠিয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে। বিভিন্ন পদে প্রায় ২১১ জন জনবল বাড়াতে সম্প্রতি একটি প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠায় সংস্থাটি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে কাজের পরিধি ও আয়তন বাড়লেও নতুন করে জনবল বাড়েনি সিডিএ’র। উল্টো ৫১৯টি পদের বিপরীতে প্রায় দুইশটি পদই বর্তমানে শূন্য।

জানা যায়, সিডিএ’র পক্ষ থেকে মন্ত্রণা লয়ে পাঠানো নতুন জনবল কাঠামো ৮৩০ করার জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। অথরাইজড অফিসার, সহকারী অথরাইজড অফিসার, নগর পরিকল্পনাবিদ, নির্বাহী প্রকৌশলী, সহকারী প্রকৌশলী ও স্থপতির পদসহ বিভিন্ন পদ সৃষ্টির জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এছাড়া, প্রশাসন এবং অর্থ ও হিসাব শাখায়ও পদ বৃদ্ধির জন্য প্রস্তাব রয়েছে।

সিডিএ’র সূত্র জানায়, সিডিএ’র সর্বশেষ অর্গানোগ্রাম (জনবল কাঠামো) অনুযায়ী সিডিএতে ৫১৯ জন জনবল রয়েছে। তবে বর্তমানে মোট ১৯৪টি পদ শূন্য রয়েছে। এরমধ্যে প্রথম শ্রেণির ৫৮টি পদের মধ্যে ১৮টি, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৪৭টি পদের মধ্যে ১০টি, তৃতীয় শ্রেণিতে ১৪১টি পদের মধ্যে ৬৪টি এবং চতুর্থ শ্রেণিতে ২৭৩টি পদের মধ্যে ১০২টি পদ শূন্য রয়েছে।

এদিকে, মামলা জটিলতায় গত এক যুগের বেশি সময়েও কোন জনবল নিয়োগ দিতে পারেনি সিডিএ। সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি, জনবল সংকটের কারণে দায়িত্বপালনে নিয়মিত হিমশিম খেতে হচ্ছে। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তুলনায় এখনো পর্যন্ত সিডিএ’র লোকবল অনেক কম।

সিডিএ’র একাধিক কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে ১৯৮৪ সালের অর্গানোগ্রাম (জনবল কাঠামো) দিয়ে এখনো সিডিএ চলছে। বর্তমানে সিডিএ’র কার্যক্রম ও কাজের পরিধি বাড়লেও লোকবল কমেছে। অর্গানোগ্রাম পরিবর্তন করার জন্য সিডিএ’র পক্ষ থেকে একাধিকবার উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও কোন এক অজ্ঞাত কারণে নতুন অর্গানোগ্রাম আলোর মুখ দেখেনি। এর পিছনে সিডিএ’র কিছু ‘অসাধু কর্মকর্তা’ জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ অর্গানোগ্রাম পরিবর্তন করেছে। প্রয়োজন অনুযায়ী লোকবল নিয়োগ দিয়েছে। কিন্তু সিডিএ পুরাতন অর্গানোগ্রাম দিয়ে চলছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী জনবল নিয়োগ দিতে পারছে না।

জানা যায়, ২০১০ সালে সিডিএতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিলে সিডিএ’র সাবেক এক কর্মকর্তা এই নিয়োগের বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে মামলার সংযুক্ত বাদী হয়েছেন স্টোনোগ্রাফার হাবিবুর রহমান। মামলাটি দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০২১ সালে খারিজ হয়। জনবল নিয়োগের জন্য আদালত সিডিএ’র পক্ষে রায় দিয়েছিল। কিন্তু সেসময় জনবল নিয়োগে সিডিএ কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. হেমায়েত হোসেন। সিডিএ’র এক সভায় জনবল নিয়োগের জন্য কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি কেন এবং জনবল নিয়োগের উপর আদালতের নিষেধাজ্ঞা কেটে যাওয়ার পরও কেন নিয়োগ কার্যক্রম শেষ করতে পারেনি সিডিএ তা জানতে চান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *