অর্থনীতি

আসছে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট

চলমান অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণ, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কৃচ্ছ্রতাসাধন ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর ঋণ সহায়তার শর্তপূরণ ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করা হবে। ফলে এবারের বাজেটের আকার আশানুরূপ বাড়ছে না। আগামী বাজেটের প্রস্তাবিত সম্ভাব্য আকার হচ্ছে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। আগামী বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতির গড় হার ৬ দশমিক ৫০ শতাংশের মধ্যে সীমিত রাখা হবে।

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত আর্থিক, মুদ্রা ও মুদ্রা বিনিময় হার সংক্রান্ত কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল এবং ‘বাজেট ব্যবস্থাপনা ও সম্পদ কমিটি’র ভার্চুয়াল বৈঠকে আগামী বাজেটের এ খসড়া রূপরেখা উপস্থাপন করা হয় বলে বৈঠক সূত্রে জানা যায়। অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এই সভায় সভাপতিত্ব করেন।

জানা গেছে, চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ধরা হয়েছিল ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে বাজেটের প্রস্তাবিত সম্ভাব্য আকার ধরা হচ্ছে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা।

ফলে এবারের বাজেটের আকার আশানুরূপ বাড়ছে না। সে হিসাবে বাজেটের আকার বাড়ছে ৪ দশমিক ৬২ শতাংশ। টাকার অঙ্কে বাজেটের আকার বাড়ছে মাত্র ৩৫ হাজার ২১৫ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে মূল বাজেটের আকার এর আগের অর্থবছরের তুলনায় ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রমতে, প্রতিবছর বাজেটের প্রবৃদ্ধি ১০ থেকে ১২ শতাংশ ধরেই প্রাক্কলন করা হয়। এবার সেটি ৫ শতাংশের নিচে বাড়বে। কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ রাজস্ব আদায় না হওয়া, প্রবাসী আয় কমে যাওয়া এবং আমদানি ও রফতানি পরিস্থিতি আশানুরূপ ভালো না হওয়ায় বাজেটের আকার তেমন বাড়ছে না। আসন্ন বাজেটের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আর্থিক নীতির সঙ্গে রাজস্ব নীতির সমন্বয়।

জানা যায়, নতুন বাজেটে সম্ভাব্য মোট আয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে ঘাটতি দাঁড়াচ্ছে ২ লাখ ৫৭ হাজার কোটি টাকা (জিডিপি’র ৪.৬%)। ঘাটতি পূরণে বিদেশি সহায়তা আর ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ কোটি টাকা। বাকিটা অভ্যন্তরীণ উৎস (ব্যাংক, সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য) থেকে ঋণ নিয়ে পূরণ করা হবে।

সূত্রমতে, আগামী বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়বে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা বাড়নো হতে পারে। আর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)-এর আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের এর আকার ছিল ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। তবে সংশোধিত বাজেটে ১৮ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে এডিপি’র আকার ২ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রতাসাধনে চলতি বাজেটে গাড়ি কেনা, ভূমি অধিগ্রহণ, ভবন নির্মাণসহ অন্যান্য কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। এটি আগামী অর্থবছরেও অব্যাহত থাকবে। চাহিদার দিক থেকে অনেক কিছু হ্রাস করা হচ্ছে। পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরবরাহ ঠিক রাখতে গিয়ে টিসিবি ও ওএমএস কর্মসূচির মাধ্যমে পণ্য সরবরাহ বৃদ্ধি, বাজার মনিটরিং জোরদার করা হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *