চট্টগ্রামপার্বত্য চট্টগ্রাম

কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পাঁচ ইউনিটে সচল মাত্র একটি

শুকনো মৌসুমে পানি কম থাকে কাপ্তাই হ্রদে। ফলে কমে গেছে বিদ্যুৎ উৎপাদন। এছাড়া দীর্ঘদিন ড্রেজিং না থাকায় নাব্যতা হারিয়ে হ্রদে জেগে উঠছে খণ্ড খণ্ড চর। ফলে নৌযোগাযোগ ব্যাহত হয়ে গণভোগান্তি বেড়েছে।

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলায় রয়েছে দেশের একমাত্র পানি বিদ্যুৎকেন্দ্র কাপ্তাই হাইড্রো-ইলেকট্রিক পাওয়ার স্টেশন, যেখানে পানির প্রবাহকে কাজে লাগিয়ে স্বল্প খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়ে থাকে। এ পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে রয়েছে ৫টি ইউনিট। যেই ৫টি ইউনিট একযোগে সচল থাকলে ২৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। তবে দীর্ঘদিনের অনাবৃষ্টি এবং পলিমাটি ভরাট হয়ে কাপ্তাই লেকের পানির স্তর কমে যাওয়ার ফলে পানির উপর নির্ভরশীল এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন সর্বনিম্ম পর্যায়ে চলে এসেছে। বর্তমানে ৫টি ইউনিটের মধ্যে মাত্র ১টি ইউনিটে সীমিত পরিমাণে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে।

কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান সময়ে কাপ্তাই হ্রদে পানির পরিমাণ রুলকার্ভ অনুযায়ী ৯০ ফুট মিন সি লেভেল (এমএসএল) থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে পানি রয়েছে ৮০ ফুট মিন সি লেভেল। অর্থাৎ রুলকার্ভের পরিমাপ অনুযায়ী কাপ্তাই হ্রদে বর্তমানে প্রায় ১০ ফুট পানি কম রয়েছে। আর কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সক্ষম হলেও পানির অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। এদিকে কাপ্তাই হ্রদে সম্প্রতি ভারী বৃষ্টিপাত না হলে পানি বাড়ার ও আর সম্ভাবনা নেই। এতে পানি স্বল্পতায় দিন দিন কমে আসবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ।

এ বিষয়ে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আব্দুজ্জাহের জানান, দীর্ঘদিনের অনাবৃষ্টির ফলে কাপ্তাই হ্রদের পানির স্তর কমেছে। এতে বর্তমানে ১টি ইউনিট দিয়ে দৈনিক ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে। তবে সামনে বৃষ্টিপাত হলে এবং কাপ্তাই হ্রদের পানির পরিমাণ বাড়লে বিদ্যুৎ উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি জানান।

এদিকে কাপ্তাই হ্রদে পানির স্তর কমে যাওয়ার ফলে একদিকে যেমন বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে তেমনি হ্রদের উপর নির্ভরশীল মানুষের জনভোগান্তি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে কাপ্তাই হ্রদের সাথে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি উপজেলার সাথে নৌপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। হ্রদের বিভিন্ন স্থানে জেগে ওঠা নতুন চরের কারণে নৌ-চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পাশাপাশি কাপ্তাই হ্রদের বেশ কিছু অংশে পলিমাটি ভরাট হওয়ার ফলে দেখা দিয়েছে নাব্যতা সংকট।

এছাড়া কাপ্তাই হ্রদের উপর নির্ভরশীল স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ভারী বৃষ্টিপাত না হওয়া পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে পানি বাড়ার কোন সম্ভাবনা নেই। তাই দ্রুত সময়ে কাপ্তাই হ্রদে ড্রেজিং করা প্রয়োজন। ড্রেজিং এর মাধ্যমে কাপ্তাই হ্রদের গভীরতা বাড়লে এই সমস্যা থেকে কিছুটা সমাধান পাওয়া যাবে বলে তারা আশা করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *