চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম ওয়াসার পানি সরবরাহে শঙ্কা বাড়াচ্ছে,

দ্বিমুখী সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রাম ওয়াসার পানি সরবরাহ। একদিকে লবণাক্ততা, অন্যদিকে নদীর বুকে জেগে ওঠা চরের কারণে ভবিষ্যতে স্বাভাবিক পানি সরবরাহ নিয়ে শঙ্কিত ওয়াসার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ওয়াসার উচ্চ পর্যায়ের একটি টিম কর্ণফুলী নদী সরেজমিনে সমীক্ষা চালিয়ে এ চিত্র পেয়েছে।

এদিকে, লবণাক্ততার কারণে ওয়াসার দৈনিক পানি উৎপাদন কমে গেছে প্রায় ৮ কোটি লিটার। তাতে সংকট বেড়েছে নগরীতে। এমনিতে শুষ্ক মওসুমের কারণে নবণাক্ততা বেড়েছে হালদা নদীতে। এ কারণে ওয়াসার মদুনাঘাট শেখ রাসেল পানি সরবরাহ প্রকল্প ও মোহরা পানি সরবরাহ প্রকল্পের উৎপাদন অনেকখানি হ্রাস পেয়েছে। ভাটার সময়ে অতিরিক্ত লবণপানির কারণে উৎপাদন বন্ধ থাকায় এ সমস্যা তৈরি হয়েছে। গতকাল এ দুটি প্রকল্পে পানি উৎপাদন হয়েছে ১৩ কোটি লিটার। অথচ এ দুটি প্রকল্পে স্বাভাবিক সময়ে পানি উৎপাদন হতো দৈনিক ১৮ কোটি লিটার।

একই অবস্থা তৈরি হয়েছে রাঙ্গুনিয়ার কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প-১ ও ২ এর ক্ষেত্রেও। কর্ণফুলী নদীর স্তর কমে যাওয়ায় সেখানেও দৈনিক এক কোটি লিটার পানি কম উৎপাদন হচ্ছে। তাছাড়া ওয়াসার গভীর নলকূপেও পানি উৎপাদন কমে গেছে। এসব সমস্যার কারণে ওয়াসার ৫০ কোটি লিটার উৎপাদন ক্ষমতার বিপরীতে গতকাল সবগুলো প্রকল্পে পানি উৎপাদন হয়েছে ৪২ কোটি লিটার। তাতে নগরীতে পানি সংকট ছিল প্রায় ৮ কোটি লিটার। রেশনিং পদ্ধতিতে এ পানি সরবরাহ দিচ্ছে ওয়াসা।

কাপ্তাই লেকের পানি অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ায় জোয়ারে কর্ণফুলী ও হালদা নদীতে প্রবেশ করছে বঙ্গোপসাগরের লবণপানি। অথচ এ দুটি নদীকে ঘিরে ওয়াসার সবগুলো পানি উৎপাদন প্রকল্প রয়েছে। কিন্তু হালদা নদীতে লবণপানির আগ্রাসনের কারণে পানি সংকট তৈরি হয়েছে। অপরদিকে কর্ণফুলী নদীতে কমে গেছে পানির স্তর। চলমান পানির উৎপাদন ঘাটতি এবং তা থেকে উত্তরণের পথ খুঁজতে গত ২৬ মার্চ দিনব্যাপী কর্ণফুলী নদীতে সমীক্ষা চালায় ওয়াসার একটি উচ্চ পর্যায়ের টিম।

ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (প্রকৌশলী) বিষ্ণু কুমার সরকারের নেতৃত্বে এ টিমে ছিলেন প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নুরুল আমিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মুহম্মদ মাহবুবুল আলম প্রমুখ। সমীক্ষা টিম কালুরঘাট ব্রিজ থেকে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকা পর্যন্ত প্রায় ১৬টি পয়েন্টে পানির গভীরতা পরীক্ষা করে। তাতে নদীতে ভাটার সময়ে সর্বনি¤œ ৬ ফুট থেকে সর্বোচ্চ ২৪ ফুট পর্যন্ত পানির উচ্চতা দেখতে পান। একই সমীক্ষায় রাঙ্গুনিয়ার কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্পের ইনকেট পয়েন্ট থেকে উজানে নদীর বুকে পরপর তিনটি জেগে ওঠা চর দেখতে পাওয়া যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *